1. desherchitrabd@gmail.com : Desher DesherChitra : Desher Chitra
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা: চিকিৎসক বাংলাদেশ পুলিশের দুর্নীতি: নতুন সরকারের দায়িত্ব ও জনমতের চাপ মৌলভীবাজারে লাইফলাইন হাসপাতালে অনিয়ম ও অবহেলার অভিযোগ ছাত্রদলের কমিটি গঠনে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ দক্ষিণ সুরমায় সাংবাদিকের বাসায় হামলা: ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাট লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাচ্ছেন ডা. জুবাইদা খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন কি না—চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের: মির্জা ফখরুল বাংলাদেশে কারও নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই,তারেক রহমানের ফেরাকে ঘিরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আশ্বাস জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগদানের ঢল: মির্জা ফখরুল ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ, কাঠগড়ায় সিআইডি কর্মকর্তা

পারমাণবিক শক্তিতে চীন কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলছে

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চীন দ্রুত বিশ্বের শীর্ষ পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে নির্মাণাধীন পারমাণবিক চুল্লির সংখ্যা বিশ্বের বাকি সব দেশের মোট সংখ্যার প্রায় সমান। ২০৩০ সালের মধ্যেই চীনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও নির্মাণ দক্ষতা

চীনের অধিকাংশ রিঅ্যাক্টর মার্কিন ও ফরাসি নকশা অনুসরণে তৈরি হলেও পশ্চিমা দেশগুলোর মতো দীর্ঘ বিলম্ব বা অতিরিক্ত ব্যয়ে তারা ভোগেনি। বরং দেশটি এখন পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তিতে এমন সাফল্য অর্জন করছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এখনো অর্জন করতে পারেনি।

চীনের রাষ্ট্রীয় তিনটি পারমাণবিক সংস্থা সরকার সমর্থিত স্বল্প সুদের ঋণ ও নীতিগত সুবিধা পায়। ফলে তারা দ্রুত ও কম খরচে নতুন রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করতে পারছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে একটি রিঅ্যাক্টর নির্মাণে গড়ে ১১ বছর সময় লাগে, সেখানে চীন মাত্র ৫–৬ বছরে কাজ শেষ করছে।

ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ও জ্বালানি যুদ্ধক্ষেত্র

বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় এখন পারমাণবিক শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্র জীবাশ্ম জ্বালানিতে (তেল, গ্যাস ও কয়লা) নেতৃত্ব নেয়, আর চীন সৌর প্যানেল, ব্যাটারি ও বায়ু টারবাইন উৎপাদনে এগিয়ে যায়। এখন পারমাণবিক শক্তির খাতে চীনের অগ্রগতি সেই প্রতিযোগিতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, একটি রিঅ্যাক্টর নির্মাণ প্রকল্প দুটি দেশের মধ্যে বহু দশকব্যাপী অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করে। তাই এই বাজারে নেতৃত্ব পাওয়া মানেই বৈশ্বিক প্রভাব বৃদ্ধি।

যুক্তরাষ্ট্রে স্থবিরতা ও চীনের সাফল্য

১৯৮০–এর দশকে থ্রি মাইল আইল্যান্ড দুর্ঘটনা, সুদের হার বৃদ্ধি ও কঠোর নিরাপত্তা বিধি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক খাতকে স্থবির করে দেয়। ২০০০ সালের পর নতুন প্রজন্মের এপি–১০০০ রিঅ্যাক্টর নির্মাণেও দেশটি ব্যয়বৃদ্ধি ও বিলম্বে বিপাকে পড়ে।
অন্যদিকে, একই প্রযুক্তি থেকে চীন নিজস্ব সিএপি–১০০০ সংস্করণ তৈরি করেছে—যার নয়টি রিঅ্যাক্টর নির্মাণাধীন এবং পাঁচ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া

চীনের নিরাপত্তা মান এখন পশ্চিমা বিশ্বের সমতুল্য হলেও, অনুমোদন প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত। যুক্তরাষ্ট্রে কোনো প্রকল্পে রাজ্য ও ফেডারেল সরকারের অনুমতি নিতে বছর লেগে যায়, কিন্তু চীনে সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নির্মাণ শুরু হয়।

তবে চীনের সামনে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে—বিকিরণ লিকেজ, পারমাণবিক বর্জ্য সংরক্ষণ এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা।

বিশ্ববাজারে চীনের বিস্তার

চীন ইতোমধ্যে পাকিস্তানে ছয়টি রিঅ্যাক্টর নির্মাণ করেছে এবং আরও দেশকে রপ্তানি করতে চায়। তারা এখন চতুর্থ প্রজন্মের গ্যাস–কুলড রিঅ্যাক্টর ও থোরিয়াম–ভিত্তিক চুল্লি তৈরি করছে। এসব প্রযুক্তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি শিল্পপ্রয়োজনে তাপ সরবরাহেও সক্ষম।

সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, পরবর্তী প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অন্তত ১০–১৫ বছর এগিয়ে।

বিশ্লেষক পল স্যান্ডার্স বলেন, “আমরা হয়তো মিত্র দেশগুলোকে চীনা রিঅ্যাক্টর না কেনার পরামর্শ দিতে পারব, কিন্তু শক্তির তীব্র চাহিদাসম্পন্ন দেশগুলো বিকল্প খুঁজবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত না থাকলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে।”

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

Share this Post in Your Social Media

Comments are closed.

এই ধরনের আরও খবর
Copyright © 2025, সাপ্তাহিক দেশের চিত্র. All rights reserved.
Weekly Desher Chitra developed by LogoMyface