নিজস্ব প্রতিবেদক
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সম্প্রতি দেশে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। ছাত্রজনতার আন্দোলনের পর, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিন দিন সরকারবিহীন অবস্থায় থাকার পর গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসসহ ১৭ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার প্রতিষ্ঠার পর, বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহল থেকে সরকারের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি উঠেছে, বিশেষত ন্যূনতম পাঁচ বছরের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘মার্চ ফর ইউনূস স্যার’ ব্যানারে একদল যুবক অনশন শুরু করেন। তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে তারা আমরণ অনশন করবেন।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একদল যুবক ড. ইউনূস সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবিতে অনশন শুরু করেছেন। তাদের মাথার উপরে একটি ব্যানার ঝুলছিল, যার শিরোনাম ছিল ‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচন; আগে জনতা পরে ক্ষমতা’। ব্যানারের নিচে লেখা ছিল, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ন্যূনতম ৫ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক অবস্থান, পরে চূড়ান্ত আমরণ অনশন।’ তাদের পাঁচটি প্রধান দাবিও প্রকাশ করা হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো:
১. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
২. আগামী পাঁচ বছর রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলবে, এরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
৩. আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, তারপর জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।
৪. প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদী আদর্শ ধারণ করেন, তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে এবং যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
৫. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম স্নাতক হতে হবে।
অনশনে অংশগ্রহণকারী এক যুবক বলেন, “আমরা ড. ইউনূস স্যারকে আগামী পাঁচ বছর চাই, কারণ তার নেতৃত্বেই রাষ্ট্রের সব সংস্কার সম্ভব। উনি ছাড়া এ ধরনের সংস্কার করা অসম্ভব। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। তাছাড়া জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আমরা অনেক তাজা প্রাণ হারিয়েছি, সেই হত্যাকারীদের বিচার ড. ইউনূস ছাড়া সম্ভব নয়।”
একই প্রসঙ্গে আরেক যুবক বলেন, “নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের বেশিরভাগই নামও লিখতে জানেন না। তারা ক্ষমতার জোরে এমপি হয়ে যান। শিক্ষিত নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।”
এভাবে, যুবকদের দাবির মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে তারা বর্তমান সরকারের সংস্কারমূলক কাজের প্রতি গুরুত্ব দিতে চান এবং মনে করেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই এসব সংস্কার সম্ভব।