নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজার জেলাধীন উখিয়া উপজেলার থাইংখালী ঘোনারপাড়া ৪নং ওয়ার্ডে জায়গা- জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর ২০২০ইংরেজী তারিখ আনুমানিক ১২:৪৫ ঘটিকার সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।এ সময় ঘটনাস্হল থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন উখিয়া থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন একই এলাকার মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে আব্দুল গফুর (৬৫),আব্দুল গফুরের মেয়ে সাহিদা বেগম (২২)এবং তার বোন রাশেদা বেগম(১৯)। জায়গার মালিক আব্দুল গফুরের পুত্র শাহাবুদ্দিন এবং প্রতিবেশীদের সূত্রমতে, আব্দুল গফুর তার প্রতিবেশী ইসমাঈল মিস্ত্রীর কাছ থেকে বিগত ৭ বছর পূর্বে তার বাড়ি সংলগ্ন ৪০ শতক খাস জমি নোটারীমূলে ক্রয় করে তথায় বিভিন্ন ফলজ এবং বনজ বৃক্ষ রোপণ করেন এবং বাস-গৃহ নির্মাণ করে শান্তিতে সহাবস্থানে ছিলেন।জায়গা ক্রয়ের পর থেকেই অপরপক্ষ শাহজাহান,তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম,মকবুল হোসেনের পুত্র নুরুল ইসলাম(৫৫), নুরুল হোসেনের পুত্র শফিকুর রহমান,মৃত নূর আলীর পুত্র কমল হোসেন, কমল হোসেনের পুত্র খোকন গং লোভের বশবর্তী হয়ে জায়গা জবর-দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় এবং আব্দুল গফুর গংদেরকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জড়িত করতে থাকে।শাহজাহান গং কর্তৃক দায়েরকৃত ৭টি মামলা থেকে বর্তমানে ৩টি মামলা মিথ্যা প্রমানিত হয় এবং তারা বেকসুর খালাস পায়। বর্তমানে জি আর ৩২৯/১৪(উ),জি আর ১৪২/১৫(উ), জি আর ৯৮/১৬(উ) সহ মোট ৪টি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে বলে জানান ভূক্তভোগী শাহাবুদ্দিন। ঘটনার দিন ৬ ডিসেম্বর কি ঘটেছিল জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিনের ভাই জসিম উদ্দিন এবং প্রতিবেশীরা বলেন, দুপুর আনুমানিক ১২:৪৫ ঘটিকার দিকে শাহজাহান গং দেশীয় তৈরী অস্ত্র শস্ত্র এবং লোকজনসহ দলবদ্ধ হয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে আব্দুল গফুরের মালিকানাধীন জায়গা জবরদখল উদ্দেশ্যে ঘিরা-বেড়া ভাংচুর করতে থাকে। আব্দুল গফুর পুলিশের উপস্থিতিতে একটু আশান্বিত হয়ে উনাদের কাছে ছুটে যান এবং ভাঙচুর না করে কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ উপ-পরিদর্শক কুমার দাসকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি তাদের অনুরোধ কর্ণপাত না করে শাহজাহান গংদেরকে ভাংচুরে সহযোগিতা করেন বলে জানান ভুক্তভোগী শাহাবুদ্দিন।উপায়ন্তর না দেখে আব্দুল গফুরের নাতনী, হামিদ হোসেনের মেয়ে রোমানা ইয়াসমিন(১৩) জবর-দখলের প্রমাণ স্বরূপ ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারন করার চেষ্টা করে।পুলিশ উপ-পরিদর্শক কুমার দাস বিষয়টি লক্ষ্য করে রুমানা ইয়াসমিনের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে চাইলে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু কিছুদুর যাওয়ার পর এস আই কুমার দাস রোমানাকে ধরে ফেলেন এবং ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে উভয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বেড়ার ওপর পড়ে যায়। এতে উভয়ে বাশের টেংরায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে জানান তাদের প্রতিবেশীরা।এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উখিয়া থানা পুলিশ আব্দুল গফুরসহ। তিনজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক কুমার দাস ফাতেমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলেন,মোবাইল উদ্ধার করেছেন এবং পুলিশের কাজে বাধা প্রদান এবং পুলিশের উপর আক্রমন চেষ্টার অপরাধে তিন জনকে গ্রেফতার-পূর্বক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিজে বাদী হয়ে মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।এলাকাবাসির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পুলিশের এহেন ভূমিকায় অনেকেই বিস্মিত হন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।সকলের একটাই প্রশ্ন,মোবাইলে কি এমন ছিল,যা দখলে নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত উখিয়া থানার পুলিশ প্রশাসন মরিয়া হয়ে উঠলো এবং শেষ পর্যন্ত যে কোন উপায়ে নিয়েই ছাড়লো!ক্ষুব্ধ হয় পুলিশ উপ-পরিদর্শক কুমার দাস নিজেই বাদী হয়ে আব্দুল গফুর সহ ৭জন এবং অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে ৩৩২/ ৩৩৩/৩৫৩/৩০৭/ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় মামলা করে বসেন এবং ৩ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।এই নিয়ে আব্দুল গফুর গংয়ের মামলার সংখ্যা দাড়ায় আট এ।এ সুযোগে শাহজাহান গং আব্দুল গফুরের মালিকানাধীন জায়গা জবর দখলের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফলজ এবং বনজ গাছপালা কেটে ফেলে এবং বাসা ভেঙ্গে দেয় বলে জানায় ভূক্তভোগী পরিবার। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং এলাকাবাসী প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে ন্যায় বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে প্রশাসনের সূদৃষ্টি কামনা করেন।