করোনা ভাইরাসের কারণে পবিত্র হজ চলতি বছর সীমিত আকারে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। সোমবার (২২ জুন) সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, এ বছর হজে শুধু সৌদি আরবে বসবাসরতরাই অংশ নিতে পারবেন। বাইরের দেশ থেকে এবার আর কেউ হজ পালন করতে পারবেন না। সৌদি রাষ্ট্রীয় প্রেস এজেন্সির বরাতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বরাতে সৌদি প্রেস এজেন্সি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বর্তমানে সৌদি আরবে বিভিন্ন দেশের মুসলিম যারা বসবাস করছেন, সেখান থেকে স্বল্প সংখ্যক নাগরিক হজে অংশ নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে এবার হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা ভাইরাস মহামারি অব্যাহত থাকায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে ও বড় সমাবেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
করোনার সংক্রমণও বিশ্বজুড়ে দিন দিন বাড়ছে। এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধকও বের হয়নি। এই অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখো হাজিদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
সে জন্যে সকলের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌদি হজ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুসলমানদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েই হজের আনুষ্ঠানিকতা সীমিত করা হয়েছে।
এছাড়া সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতাদের ফোরাম দি কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার হাজিদের সংখ্যা সীমিত রাখার এই সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছে বলে আরব নিউজ জানিয়েছে। সৌদি আরবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর কাবা শরিফেও নামাজ আদায় বন্ধ করে দিয়েছিল সৌদি সরকার।
সোমবার নাগাদ বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখ এবং সৌদি আরবে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর সীমিত পরিসরে হজের আনুষ্ঠানিকতা সারার সিদ্ধান্ত এল। গতবছর সারাবিশ্বের প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম হজ পালন করতে সৌদি আরব যান।
এর মধ্যে প্রায় ১৮ লাখ পুণ্যার্থী বিভিন্ন দেশ থেকে এতে অংশ নিয়েছিলেন। হজ এবং ওমরাহ থেকে সৌদি সরকার প্রতি বছর ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আদায় করে। এবার বাংলাদেশ থেকে ৬৪ হাজার ৫৯৪ জন হজে যেতে আগ্রহী ছিলেন। সৌদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে তাদের হজে যাওয়া হচ্ছে না। জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৫ জন। মারা গেছে ১ হাজার ৩০৭ জন।