নিজস্ব প্রতিবেদক::
কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার চান্দের পাড়ায় প্রতারক বোরহান উদ্দিন ফোরকানের (৩৮) নারী সংগ্রহের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সে অসংখ্য নারীকে তার অধীনস্থ করে ইয়াবা পাচারের কাজে ব্যবহার করে আসছে বলে গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূর্বের যাবতীয় তথ্য গোপন করে এখন পর্যন্ত একে একে ৩তরুণীর সামাজিক জীবনকে বিষন্ন করে তোলেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত ৭জানুয়ারী কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নাসিমা (১৮) নামে এক তরুণী নিজেকে বোরহানের স্ত্রী দাবী করে এসব অভিযোগ করে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ঝিলংজার চান্দের পাড়ার মৃত মো. ইকবালের পুত্র বোরহান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে বসবাস করে আসছে। নির্দিষ্ট কোনো পেশার সাথে সে জড়িত নয়। সময় সময়ে গজিয়ে উঠা নানাবিধ প্রতারণামূলক ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে সে জড়িত ছিলো। এইমওয়ে, স্কীলহোম, ইউনিপে-টুসহ আরও বেশ কিছু কুখ্যাত প্রতারণামূলক প্রতিষ্ঠানের এমডি চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে সে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ইদগাঁওর জনৈক মোবারকের নিকট হতে স্কীলহোমের লাভজনক ব্যবসায়ের অংশীদার বানাবেন বলে ১১লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এসবের আড়ালেই চলতো বোরহানের ইয়াবা পাচারের কাজ। আর এসব প্রতারণামূলক কাজগুলো নির্বিঘে করতে সে ব্যবহার করতো অসংখ্য নারী। তন্মধ্যে এমন তিন জন নারীর তথ্য পাওয়া গেছে যাদের সে বিয়ে করেছে বলে দাবী উঠেছে। এবং সর্বশেষ তৃতীয় স্ত্রী দাবীদার নাসিমা বোরহানের এসব অপকর্মে সহায়তা না করায় একের পর অবর্ননীয় নির্যাতন নেমে আসে তার জীবনে। বোরহানের সব অপকর্মের কথা জানতে পারলে নাসিমা সম্প্রতি সংসার ত্যাগ করে পিত্রালয়ে অবস্থান করছে।সূত্রে জানা যায়- মাদক ব্যবসায়ী প্রতারক বোরহান মূলত তার মা জাহান আরা বেগম এবং বোন শাহীনা আক্তারের ইন্ধনে এসব অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী নাসিমার দেওয়া তথ্য মতে- মা এবং বোনই বোরহানের এমন জঘন্য প্রতারক হয়ে উঠার নেপথ্যের কারিগর। নারী লিপ্সু বোরহানের একে একে তিন বিয়ে তথা তিন জন নারীর সামাজিক জীবনকে ধ্বংস করার পেছনে এদুজনই দায়ী। বোরহান সর্বপ্রথম বিয়ে করে তওহীদা আক্তার নামে এক যুবতীকে। তাকে চট্টগ্রাম থেকে বিয়ে করে। ঐ স্ত্রীর কাছে তার দুই সন্তান রয়েছে। এরপরে কক্সবাজার তার গ্রামের বাড়ি থেকে বিয়ে করে তার আপন ফুফাতো বোন আম্বিয়া খাতুনকে। এখানেও রয়েছে তার এক সন্তান। সর্বশেষ নাসিমাকে বিয়ে করে গত ৫ অক্টোবর ২০১৮। এরপরে বোরহানের মাদক সংশ্লিষ্টতা ও প্রতারণামূলক কর্মকান্ডের বিষয়টি টের পেলে নাসিমা তাকে বাঁধা প্রদান করতে থাকে। বোরহানের ব্যাপারে তার অপরাপর স্ত্রীদের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তারা উভয়েই তাকে প্রতারক, নারী লোভী ও মাদক ব্যবসায়ী বলে মন্তব্য করেন। তারা সকলেই তার এই বন্দীশালা থেকে মুক্তি চান। এমনকি কান্নাজড়িত কন্ঠে তওহীদা প্রতিবেদককে জানান- দুটি সন্তান নিয়ে সে এখন পাগলপ্রায়। গত ৬/৭ বছর ধরে কোনো খোঁজ খবর নিচ্ছে না বোরহান। এবং তালাকও দেয়নি।অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বোরহান চট্টগ্রামের চকবাজারে কেবি আমান আলী রোডে রহমান ম্যানশন নামে একটি সুরম্য ভবন তৈরি করেছে। সেখানে তার মা ও বোনকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি নাসিমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর মডেল থানা পুলিশ বোরহানের ঝিলংজার চান্দের পাড়ার ঠিকানায় খোঁজ নিতে গেলে সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি বলে জানায়। এলাকাবাসীও তার পলাতক থাকার বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে। কক্সবাজারে যেকোনো অঘটন ঘটানোর পরে সে চট্টগ্রামের ওই বাড়িতে আশ্রয় নেন বলে জানা যায়।এবিষয়ে সদর মডেল পুলিশ জানিয়েছে- অভিযুক্ত বোরহানকে থানায় হাজির করার চেষ্টা করা হয়েছিলো কিন্তু অভিযোগে উল্লেখিত ঠিকানায় তাকে পাওয়া যায়নি। সুতরাং অভিযুক্ত বোরহানের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শীঘ্রই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবে।