অনলাইন ডেস্ক
মাদ্রাসা ছাত্রীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত এক সুপারিনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে জামায়াতপন্থী কর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ধর্মঘট, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের সুপারিনটেনডেন্ট দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছিলেন। সম্প্রতি কয়েকজন সাহস করে ঘটনাটি প্রকাশ করলে মাদ্রাসাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে মাদ্রাসার ছাত্র মোহাম্মদ ইমরান অভিযোগ করেন, শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের সময় হঠাৎ জামায়াতপন্থী কয়েকজন এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তিনি বলেন, “আমরা শুধুই প্রতিবাদ করছিলাম। কিন্তু জামায়াতের লোকজন এসে আমাদের মারধর করে। অনেক ছাত্র আহত হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সুপারিনটেনডেন্ট জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই তাকে রক্ষায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে একাধিক ছাত্রী জানান, অভিযোগ তোলার পর তারা গুরুতর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের আশঙ্কা—প্রভাবশালী মহল তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে কিংবা প্রতিশোধ নিতে পারে।
এক ছাত্রী বলেন, “আমরা যা সহ্য করেছি তা বলতে ভয় লাগে। এখন আবার হামলার ভয় পাচ্ছি। আমাদের সুরক্ষা দরকার।”
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পরও প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। তারা দ্রুত তদন্ত, কঠোর ব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মেয়েদের ওপর নির্যাতন হবে, আবার প্রতিবাদ করতে গেলেও হামলার শিকার হতে হবে—এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না।”
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, যৌন নির্যাতন ও হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার বা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করা যায়নি।