নিজস্ব প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের একটি বহুতল অফিস ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের (NYPD) কর্মকর্তা ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দিদারুল ইসলাম রতন (৩৬)। তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার মাগুরা এলাকায়। তার মৃত্যুর খবরে এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
দিদারুল ইসলাম ২০০৯ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর যুক্ত হন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে। দেশে থাকাকালীন তিনি কুলাউড়া নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
নিহতের ফুফু তাহেরা বেগম দুলি জানান, রতনের বাবার নাম মো. আব্দুর রব ও মায়ের নাম মিনারা বেগম। তার দুই বোন নাঈমা ও নাদিমা। দিদারুল প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে NYPD-তে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। তারা ব্রঙ্কসের পার্চেস্টার এলাকায় বসবাস করতেন। তবে নিহতের মরদেহ দেশে আসবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ফুফু তাহেরা বেগম আরও বলেন, “নিউইয়র্কে থাকা স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারি, রতন সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। সে খুবই ভদ্র, শান্ত এবং মেধাবী ছেলে ছিল। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের মাতম চলছে।”
রতনের আদি বাড়ি বড়লেখা উপজেলার শিক্ষারমহল গ্রামে। তাঁর বাবা আব্দুর রব একসময় কুয়েতে প্রবাসী ছিলেন। প্রায় দুই দশক আগে তিনি কুলাউড়ার মাগুরা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ২০০৯ সালে রতনের মামার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুরো পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়।
মাগুরা এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক নাজমুল বারী সোহেল জানান, “রতন আমাদের এলাকার সন্তান। সে দেশে থাকাকালীন একজন চমৎকার খেলোয়াড়ও ছিল। তার এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো মাগুরা ও কুলাউড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।”
এ ঘটনায় কুলাউড়া থানা পুলিশও শোক প্রকাশ করেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফারুক আহমদ বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শেন তামুরা নামের ২৭ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী হামলা চালালে দিদারুলসহ মোট পাঁচজন নিহত হন। নিহত দিদারুলের পৈতৃক বাড়ি কুলাউড়ার মাগুরা এলাকায় হলেও বর্তমানে সেখানে তার পরিবারের কেউ থাকেন না—সেই বাড়িতে এখন ভাড়াটিয়ারা বসবাস করছেন।”
Leave a Reply