নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, এনসিপি কোনোভাবেই নির্বাচন পেছানোর পক্ষে নয়। বরং একটি সার্বিক রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে জুলাই সনদ, বিচার ও নির্বাচনকে প্যাকেজ আকারে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে দলটি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় যশোর শহরের একটি হোটেলে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে সভার আয়োজন করা হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমাদের দাবি, কোনো পক্ষবিশেষের স্বার্থে নির্বাচন নয়। নির্বাচন হতে হবে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিচারের আওতায় আনার পর। ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ ছিল, সেটিতে ফেরা যাবে না।”
তিনি বলেন, “আগামী দিনে ৫ আগস্টকে ‘মব’ হিসেবে অভিহিত করা হবে। কারণ আওয়ামী লীগকে আবার ভোট ফেরানোর নামে দেশে অপরাজনীতি ও ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাচ্ছে একটি মহল। আমরা তা হতে দেব না।”
হাসনাত বলেন, “গত ১৬ বছরে আন্দোলনে তৃণমূল কর্মীরা নির্যাতিত হলেও অনেক বিএনপি নেতা বিলাসী জীবন যাপন করেছেন। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোপনে ব্যবসা করেছেন। আমরা বলি—তৃণমূলের ত্যাগ ও রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এখন বিএনপি মনে করে, তাদের বিবেচনাতেই সব কিছু চলবে। এটা হতে পারে না। মাঠের বাইরে বসে খেলা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। খেলতে হলে মাঠে নামতে হবে।”
হাসনাত বলেন, “আমরা বাংলাদেশপন্থি নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম ও সরকার দেখতে চাই। এখন দেশ চলছে ব্যক্তিপূজার সংস্কৃতিতে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
তিনি ঘোষণা দেন, ৩ আগস্ট ‘জুলাই সনদ’ দাবির আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য জনগণকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সভায় জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সঠিকভাবে হচ্ছে না—এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসনাত বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জুলাই আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। তবে এনসিপি এ বিষয়ে সরাসরি ভূমিকা পালন করবে।”
মতবিনিময় সভায় এনসিপি নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এটাই জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি। সনদকে লিখিতভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে বর্তমান কাঠামোয় গণপরিষদ ছাড়া তা সম্ভব নয়—এমন অবস্থায় সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে হবে, অন্যথায় আওয়ামী লীগই বহাল থাকবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারা, নুসরাত তাবাসসুম প্রমুখ। সভায় যশোরের ৪ জন শহীদ পরিবারের সদস্য এবং ১৫ জন আহত কর্মী অংশগ্রহণ করেন।