অনলাইন ডেস্ক
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জি৭-এর প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যসহ বৈশ্বিক কূটনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনবে।
মাখোঁ জানান, “মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির প্রতি ফ্রান্সের ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই” এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট প্রভাবিত হন।
মূলত জুনে নিউইয়র্কে সৌদি আরবের সঙ্গে একটি সম্মেলনে এই স্বীকৃতি ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে সেই সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়।
বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফরাসি সিদ্ধান্ত সরাসরি গাজায় প্রভাব ফেলবে না হলেও, বিভিন্ন রাষ্ট্রকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। ইতিমধ্যে কানাডাও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতি ও মানবিক শর্ত না মানে, তবে তার দেশও সেপ্টেম্বরে একই পদক্ষেপ নিতে পারে।
এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চীন ও রাশিয়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্স স্বীকৃতি দিলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হবে ব্যতিক্রম। জি৭ গোষ্ঠীর মধ্যে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা একই পথে হাঁটলে যুক্তরাষ্ট্র একা পড়ে যাবে।
এখন পর্যন্ত ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্সের স্বীকৃতি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে ১৪৮তম দেশ।
ইসরায়েলি সরকারের ভেতরে-বাইরে চাপ বাড়ছে
গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ছে। জিম্মিদের মুক্তি না হওয়ায় দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এদিকে, ইসরায়েলের ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক—যাদের মধ্যে অস্কারজয়ী নির্মাতা, কবি, শিক্ষাবিদ ও সাবেক আইনপ্রণেতা রয়েছেন—এক বিবৃতিতে গাজা আগ্রাসন বন্ধ না হলে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। তারা বলেছেন, লাখো ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক গাজা থেকে সরানোর পরিকল্পনা ও সেখানে অনাহারে মৃত্যু ঘটানো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
Leave a Reply