আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের অযোধ্যায় ধ্বংস হওয়া বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের দাবি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিজেপি এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেন ভরতপুরের বিধায়ক ও তৃণমূল থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত নেতা হুমায়ুন কবীর। তাঁর ডাকে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগম হয়।
আয়োজকরা জানান, কোনও ধরনের সংঘর্ষ ছাড়াই অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তাবিত নির্মাণস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নির্মিত মঞ্চে কবীর প্রায় ৪০০ মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি সৌদি আরব থেকে আগত বলে পরিচয় দেওয়া দুই আলেমের উপস্থিতিতে ফিতা কেটে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’ স্লোগানে।
কবীর বলেন, মসজিদ নির্মাণ সাংবিধানিক অধিকার এবং ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ‘মানসিক ক্ষত নিরাময়ের অংশ’ হিসেবে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “দেশে ৪০ কোটি মুসলমান, পশ্চিমবঙ্গে ৪ কোটি—তাহলে একটি মসজিদ নির্মাণে এত আপত্তি কেন?”
তবে তৃণমূল কংগ্রেস এই আয়োজন থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ব্যক্তিগত জমিতে যে কেউ উপাসনালয় নির্মাণ করতে পারেন, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে ধর্মীয় আবেগ উসকে দেওয়া উচিত নয়।
বিজেপি এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেন, “এটি ধর্মীয় নয়, পুরোপুরি রাজনৈতিক প্রকল্প—মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক সুসংহত করাই এর উদ্দেশ্য।” বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরি করছে।
এ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি লিখেছেন, “বাংলার মাটি কখনো বিভেদের কাছে মাথা নত করেনি।”