আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের রাজধানী দিল্লির লাল কিলা সংলগ্ন এলাকায় ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটে। Hyundai i20 গাড়িটি লাল কিলা মেট্রো স্টেশনের কাছে আচমকাই বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের শব্দ এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে আশপাশের ভবনগুলো কেঁপে ওঠে এবং সিগনাল এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানায়, কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ২০–৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েকটি গাড়ি, অটোরিকশা ও রিকশা ধ্বংস হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুহূর্তে সবাই আতঙ্কে দৌড়ে সরে যায়।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থা দ্রুত বিষয়টি তৎপরতা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলাকে “সন্ত্রাসী কার্যক্রম” হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং বলেন, “যারা এর পিছনে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।” National Investigation Agency (NIA) এবং দিল্লি পুলিশ তদন্তে নিয়োজিত হয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে যে বিস্ফোরণে ব্যবহৃত উপাদান ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো শক্তিশালী রাসায়নিক। গাড়িটি সম্ভবত পূর্বেই তৎপর সন্ত্রাসী সেলের হাতে প্রস্তুত করা হয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে যে এই সেলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কয়েকজন ডাক্তার। মূল সন্দেহভাজন Dr. উমর উন নবিকে চালক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে, যার সঙ্গে Dr. মুজাম্মিল শাকিল, Dr. শাহীন সাঈদ ও Dr. আদীল আহমদ rather-এর মতো সহযোগীরা যুক্ত ছিল। তাদের গাড়ি ও বিস্ফোরক প্রস্তুতির কার্যক্রম ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিল।
পুলিশ সূত্র জানায়, উমরের সঙ্গে তুরস্কভিত্তিক এক হ্যান্ডলারের যোগাযোগ ছিল এবং মোট ৩২টি গাড়ি বোমা হামলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। Hyundai i20 গাড়িটি ২৯ অক্টোবর বিক্রি হয়েছিল, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে। গাড়ির ধ্বংসাবশেষে ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে উমরের DNA মিলেছে, যা তার সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
হামলার প্রভাব রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। মেট্রো স্টেশন, বিমানবন্দর এবং জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে, এই হামলা ভারত‑পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ানোর সম্ভাবনা রাখে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা শুধুমাত্র স্থানীয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। গাড়ি‑বোমা হামলার পরিকল্পনা, বিদেশি হ্যান্ডলার ও সেল সদস্যদের সক্রিয়তা এই নেটওয়ার্ককে আরও গভীর প্রমাণিত করছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলছে, এই সেল আরও বিস্তৃত হতে পারে এবং জনসাধারণকে রক্ষা করার জন্য আরও সতর্কতার প্রয়োজন।
এই হামলা দিল্লির জনবহুল এলাকায় একটি ভয়ঙ্কর সঙ্কেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তদন্ত এখন মূলত জানতে চাইছে কিভাবে, কেন এবং কে এই হামলা আয়োজন করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দ্রুত অভিযান চালাচ্ছে, যাতে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায় এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।