নিজস্ব প্রতিবেদক:
চকরিয়ায় দুই নারীর কোমরে রঁশি বেঁধে প্রকাশ্যে ঘোরানোর ছবি ভাইরাল, আসল ঘটনা কী?কক্সবাজারের বৃহত্তর উপজেলা চকরিয়ার হারবাং এলাকার বহুল আলোচিত মা-মেয়ের কোমরে রশি বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তারা হলেন উত্তর হারবাং বিন্দারবানখীল এলাকার মাহবুবুল হকের (গরুর মালিক) ছেলে নজরুল ইসলাম (১৯), ইমরানহোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩০) ও জিয়াবুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন (২৮)।সোমবার (২৪ আগষ্ট) ভোর রাত ৩টার দিকে তাদের হারবাং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান।তিনি সাংবাদিকদের জানান, গরু চুরির অভিযোগে মা ও মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় তিনজন লোক জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসি। তাই হারবাং ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করে।এদিকে সোমবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্যাতিত মা ও মেয়েসহ তিনজনকে জামিন দিয়েছেন।জামিনপ্রাপ্তরা হলেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট কুসুমপুরের মৃত আবুল কালামের স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪০), আবুল কালামের দুই মেয়ে যথাক্রমে সেলিনা আক্তার সেলী (২৮) ও রোজিনা আক্তার (২৩)। তারা বর্তমানে কক্সবাজারে কারাগারে রয়েছেন।চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী ইলিয়াস আরিফ সাংবাদিকদের জানান, তিনি চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নির্যাতিত মা ও মেয়েসহ কারান্তরীণ ৫ জনের জামিন আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব কারান্তরীণ পারভিন আক্তার, সেলিনা আক্তার শেলী ও রোজিনা আক্তারের জামিন মঞ্জুর করেন। অপর দুই পুরুষ আসামির জামিন নামঞ্জুর করেছেন।অন্যদিকে এই ঘটনায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত দলের প্রধান কক্সবাজার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শ্রাবস্তী রায়সহ টিমের সদস্যরা তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।সোমবার দুপুরে তারা হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানসহ সংশ্লিষ্টদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।বিস্তারিত তদন্ত শেষে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুরে হারবাংয়ের দক্ষিণ পহরচাঁদা এলাকায় গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েসহ ৫ জনকে আটক করে স্থানীয়রা। সেখানে মা-মেয়ের কোমরে রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর এটি শনিবার সবখানে জানাজানি হয়।এ ঘটনায় রোববার (২৩ আগস্ট) স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা নেয় চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত।মামলাটি চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিচারক রাজিব কুমার দেব।একই ঘটনায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় হতে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।