লাইফস্টাইল ডেস্ক
একজন গড়পড়তা প্রাপ্তবয়স্ক ব্রিটিশ নাগরিকের শরীরে প্রায় ২২ কিলোগ্রাম হলুদাভ নরম চর্বি থাকে—যা লার্ডের ৮৮টি ব্লকের সমান। এই পরিমাণ চর্বি গলালে তা দিয়ে সহজেই একটি ছোট স্যুটকেসের দুই-তৃতীয়াংশ ভরা যাবে, কিংবা ৪০০টিরও বেশি মোমবাতি তৈরি করা যাবে। শুনলে কিছুটা বিবমিষা জাগতে পারে।
কিন্তু আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হলো—যে শরীরের চর্বিকে আমরা বহুদিন ধরে ভাবতাম নিষ্কর্মা, বোঝা বা অপ্রয়োজনীয়—তা আসলে আমাদের শরীরের একটি সম্পূর্ণ কর্মক্ষম অঙ্গ। একে শুধু শক্তি জমা রাখার ভাণ্ডার হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই নরম-তৈলাক্ত টিস্যুটি জীবিত, ক্রিয়াশীল এবং অত্যন্ত কমিউনিকেটিভ।
শরীরের চর্বির নিজস্ব স্মৃতি আছে, এটি নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের ক্ষুধা, বিপাক, মেজাজ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এমনকি উর্বরতা পর্যন্ত।
চর্বি এক নয়—রঙ, কাজ ও অবস্থান অনুযায়ী এর বৈচিত্র্য
গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের চর্বি মানেই এক ধরনের টিস্যু নয়। মানুষের শরীরে পাওয়া যায়—
এগুলোতে থাকে প্রতিরোধী কোষ, স্নায়ু, রক্তনালী—যা এই অঙ্গটিকে আরও বেশি কার্যকর করে তোলে।
রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থূলতা-সম্পর্কিত রোগ ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ পল কোহেন বলেন,
“আজ যদি কেউ বলে চর্বি একটি অঙ্গ—ফুসফুস বা যকৃতের মতোই গুরুত্বপূর্ণ—তবে কেউই আপত্তি করবে না।”
স্থূলতা নিয়ে ভাবনার বড় পরিবর্তন
এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আমাদের শরীর সম্পর্কে প্রচলিত ধারণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। স্থূলতাকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুধু অতিরিক্ত চর্বি জমার সমস্যা হিসেবে দেখেছি। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন—
শরীরের চর্বি যদি একটি সক্রিয় অঙ্গ হয়, তবে এটিকে শুধু হ্রাস করার চেষ্টাই নয়, বরং পুনঃপ্রোগ্রাম করেও স্বাস্থ্য উন্নত করা যেতে পারে।
অর্থাৎ চর্বিকে “শত্রু” না ভেবে, এমন একটি অঙ্গ হিসাবে দেখা উচিত যা সঠিক অবস্থায় থাকলে আমাদের
গবেষকরা তাই এখন ভাবছেন—চর্বির গঠন ও আচরণ বদলানো কি নতুন চিকিৎসার পথ হতে পারে?
সূত্র : নিউ সায়েন্টিস্ট