নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে নতুন নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম জানিয়েছেন, আগে যে গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে রেড নোটিশের আবেদন করা হয়েছিল, তার পরিবর্তে এখন ‘কনভিকশন ওয়ারেন্ট’ বা সাজার পরোয়ানার ভিত্তিতে নতুন নোটিশ পাঠানো হবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক আবেদন পাঠানো হবে।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় সোমবার ঘোষিত হয়েছে। রায়ের সার্টিফাইড কপি প্রস্তুত হলে তা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, গ্রেফতার আসামি ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণকারী পলাতকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। রায় কার্যকরের প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
১৭ নভেম্বর ঘোষিত রায়ে জুলাই–আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
এ ছাড়া আদালত অবমাননার একটি মামলায় চলতি বছরের জুলাইতে শেখ হাসিনাকে ছয় মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রসিকিউশন জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন আছে। এর মধ্যে গুমের দু’টি মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আর শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার অপেক্ষায় রয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংঘটিত গুম, গোপন আটকাল, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে দু’টি ফরমাল চার্জ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। র্যাব, ডিজিএফআই ও অন্য নিরাপত্তা সংস্থার কিছু সদস্যের সম্পৃক্ততার অভিযোগও চার্জে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই দুই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ নভেম্বর নির্ধারিত আছে।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, শেখ ফজলে নূর তাপসসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ১২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসিকিউটর তামীম জানান, পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে আগের আবেদনের পাশাপাশি এখন নতুন করে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্ট’ যুক্ত করে ইন্টারপোলের কাছে নোটিশ পাঠাতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে এবং তাদের মাধ্যমে নোটিশ ইন্টারপোলে পাঠানো হবে।