নিজস্ব প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ‘স্বৈরশাসন ও মাফিয়াতন্ত্র’ চালুর অভিযোগ তুলেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন। তিনি দাবি করেন, আসিফ মাহমুদ পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে নিজ নির্বাচনী এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করছেন, যার ফলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব অভিযোগ করেন নাছির উদ্দীন। তিনি মুরাদনগর থানায় হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আটক উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। এ সময় কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু উপস্থিত ছিলেন।
নাছির বলেন,
“যেখানে গোটা দেশ ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশে এগোচ্ছে, সেখানে মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের নেতৃত্বে একটি ভয়ংকর মাফিয়াতন্ত্র গড়ে উঠেছে। যারা বছরের পর বছর গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তাদেরই এখন জেলে পাঠানো হচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ২৭ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৩ নেতাকর্মী কুমিল্লার নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয় এবং তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এদেরই একজন নাজিম উদ্দীনের কারাবাসের খবরে তাঁর মা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৩১ জুলাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
“এই ঘটনায় মুরাদনগরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে,” বলেন নাছির।
নাছির উদ্দীন মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বলেন,
“ওসি উপদেষ্টা ও তাঁর পরিবারের প্রভাবে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। তিনি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের রক্ষা করছেন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন।”
তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ দাবি করে ওসি জাহিদুর রহমানের প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করেন।
পটভূমি ঘটনা:
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ কোম্পানীগঞ্জ বাজারে চাঁদাবাজি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী (যিনি আসিফ মাহমুদের চাচাতো ভাই) ও শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর পুলিশ আবুল কালামকে আটক করে। ওই ঘটনার জের ধরে থানায় হামলার অভিযোগ ওঠে যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক আলী আক্কাস বাদী হয়ে যুবদলের মাসুদ রানাকে প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নামসহ অজ্ঞাত ৭০–৮০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি, চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয় আবুল কালামকে প্রধান আসামি করে।
নাছির উদ্দীন তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন,
“বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে কোনো মাফিয়াতন্ত্র কিংবা স্বৈরতন্ত্র মেনে নেবে না। সময় এলে এর মূল্য উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকেই দিতে হবে।”
https://shorturl.fm/nw1kY
https://shorturl.fm/eMyNF