আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়া থেকে তেল কেনার অভিযোগে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ যোগ করে নতুন করে মোট ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে একে “অন্যায়, অযৌক্তিক ও একতরফা সিদ্ধান্ত” বলে আখ্যা দিয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের দাবি— ভারত এখনও সরাসরি বা ঘুরপথে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করছে, যার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রে অর্থায়ন হচ্ছে। এ কারণেই শুল্কের হার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শুধু ভারত নয়— রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকারী অন্যান্য দেশগুলোর বিরুদ্ধেও শিগগিরই একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সই করা এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প লিখেছেন:“আমি মনে করি ভারতের সরকার সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে শুল্ক বাড়ানো প্রয়োজন।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের জ্বালানি আমদানি নীতির মূল ভিত্তি হলো ১৪০ কোটির বেশি জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিবৃতিতে বলা হয়:“অনেক দেশই জাতীয় স্বার্থে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রয়োজনীয় তেল ও গ্যাস আমদানি করছে। অথচ একমাত্র ভারতকে লক্ষ্য করে এই ধরনের শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ দুঃখজনক ও বৈষম্যমূলক।”
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ভারত এমন কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না, যা তার জাতীয় স্বার্থ ও জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
এই নতুন শুল্ক হার অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের আমদানি শুল্ক এখন চীনের তুলনায় ২০% এবং পাকিস্তানের তুলনায় ২১% বেশি— যা আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে কঠিন করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্কবৃদ্ধির ফলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য আংশিক সুযোগ হিসেবে দেখা দিতে পারে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে।
https://shorturl.fm/8pWkV