আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক রেড ফোর্টের (লাল কেল্লা) সামনে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। দেশটির সরকার জানিয়েছে, ঘটনাটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে রেড ফোর্টের সামনে গাড়িতে থাকা বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণে আশপাশের যানবাহন ও দোকানপাটে আগুন ধরে যায়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে “কাপুরুষোচিত ও নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা” বলে উল্লেখ করে জানায়, “নিরীহ মানুষের প্রাণহানির এই ঘটনায় জাতি শোকাহত, তবে সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার নীতি’ অনুসরণ করবে।”
ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) ঘটনাটি তদন্ত করছে। পুলিশের দাবি, কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে যাদের সঙ্গে হামলার যোগ থাকতে পারে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে, পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্ভাব্য যোগাযোগের সূত্র।
পুলিশ জানায়, সোমবার ভোরে পরিচালিত অভিযানে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক, রাসায়নিক পদার্থ, ডেটোনেটর ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজন, যাদের মধ্যে দুইজন কাশ্মীরি চিকিৎসকও রয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা এখন যাচাই করছেন, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়ির চালক এই চক্রেরই সদস্য কিনা এবং সোমবার রাতের হামলাটি আগের অভিযান ও গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছে কিনা।
এটি ছিল দিল্লিতে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরে ২০ জন হিন্দু পর্যটককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, যার দায়ভার ভারত পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছিল। পরবর্তীতে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সাময়িকভাবে প্রশমিত হয়।
কিন্তু এবার রেড ফোর্ট বিস্ফোরণকে “সন্ত্রাসী হামলা” হিসেবে ঘোষণা করায় দুই দেশের সম্পর্ক আবারও সংঘাতের মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “এই হামলায় জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে খুঁজে বের করা হবে। কেউই আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার হাত থেকে রেহাই পাবে না।”