দেশের চিত্র প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত ফাঁসির আদেশে দমে যাননি তিনি—বরং আরও লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। এমনটাই দাবি করেছেন কলকাতায় অবস্থান করা তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা, যাঁদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা রয়েছেন।
সোমবার আদালতের রায় ঘোষণার পর প্রথমে স্তব্ধ হয়ে পড়েছিলেন কলকাতার আওয়ামী লীগ–ঘেঁষা নেতারা। তাঁদের ভাষ্যে, এমন রায় আসতে পারে বলে আগেই ধারণা ছিল। তবে সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর তাঁরা কেউই শেখ হাসিনাকে ফোন করার সাহস পাননি; পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন। একজন নেতা বলেন, “আমরা ভাবছিলাম, সব শেষ। কোনো আশাই আর নেই।”
সেই হতাশার কয়েক মিনিট পরই তাঁদের একজনের ফোনে কল আসে। ফোনের ওপাশে ছিলেন শেখ হাসিনা—দাবি ওই নেতার।
তাঁর ভাষ্যে, শেখ হাসিনা রসাত্মক ভঙ্গিতে বলেন,
“আমার গলায় ফাঁসির রশি পড়বে, আর তোমরা আমাকে একটা ফোনও করলে না?”
নেতা তখন স্বীকার করেন, ফোন করতে চেয়েও সাহস পাননি। জবাবে শেখ হাসিনা নাকি বলেন,
“মুহাম্মদ ইউনূস আমাকে কী ফাঁসি দেবে? আমি–ই ওকে ফাঁসি দেব! আল্লাহ এমনি এমনি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেননি। গ্রেনেড হামলায়ও আমি মরিনি।”
কলকাতার আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করছেন—এই কথাতেই তাঁরা নতুনভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।নির্বাচন ঘিরে ‘অলিখিত জোট’ ভাবনাস্থানীয় আওয়ামী নেতারা মনে করছেন, বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ১৪–দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে না দেওয়ার পরিস্থিতিতে একটি ‘অলিখিত জোট’ গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তাঁদের দাবি, কাদের সিদ্দিকীর দল ইতিমধ্যে ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ আশঙ্কা করছে—তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে নতুন সরকার আন্তর্জাতিক বৈধতা পেয়ে যেতে পারে, যা তাদের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন আরও কঠিন করে তুলবে।আওয়ামী লীগের কলকাতাভিত্তিক নেতাদের মতে, বিচারিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই বাংলাদেশে যে জনরোষ দেখা দিয়েছিল, সেটিই তাঁদের আশার জায়গা। তাঁরা সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাবলিকেও ‘গণরোষ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।
একজন নেতা বলেন,
“বাংলাদেশে এখন আওয়ামী লীগের শক্তি কম। আমাদের লোকই–বা কোথায়?”
সূত্র : আনন্দ বাজার