হাইকোর্ট জামিনেও কারাগারে আটক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার—বাংলাদেশের শান্তি ও প্রবাসী সমৃদ্ধ জেলার খ্যাতি সম্পন্ন এই জেলা এখন মানবাধিকার লঙ্ঘন ও প্রশাসনিক অন্যায়ের একটি আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেল সুপার এবং ডিবি পুলিশ দীর্ঘ সময় ধরে নিরীহ মানুষদের ওপর বেআইনী গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতন ও দমন চালাচ্ছেন।
বৈষম্য বিরোধী মামলায় নাম না থাকলেও অনেক মানুষকে তাদের বাসা, বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি মসজিদ থেকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। হাইকোর্ট বা জেলা কোর্ট থেকে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও তারা প্রায়শই কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। অভিযোগ অনুযায়ী, জামিন সংক্রান্ত তথ্য ডেপুটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। এরপর জামিনপ্রাপ্তদের জোরপূর্বক পুনরায় গ্রেফতার দেখানো হয় এবং নতুন মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
অর্থনৈতিক শোষণও নিয়মিত ঘটছে। যারা পুলিশ বা প্রশাসনকে লুকিয়ে টাকা দিতে সক্ষম, তারা অবাধে মুক্তি পাচ্ছেন। অন্যদিকে, যারা দিতে পারছেন না, তাদেরকে দীর্ঘ সময় কারাগারে রাখা হচ্ছে। এমনকি বড় অংকের অর্থ প্রদান করেও কারও মুক্তি হচ্ছে না।
কারাগারে থাকা অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা না দেওয়া, শারীরিক নির্যাতন এবং মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে জেলবন্দি রাখার ঘটনা ক্রমবর্ধমান। স্থানীয় সাংবাদিকরা এই ঘটনা জানলেও প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন না। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের এই অর্থের একটি অংশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী তহবিলে যায়।
মৌলভীবাজারের সাধারণ মানুষ এবং প্রবাসী পরিবাররা বর্তমানে একপ্রকার জিম্মি। তারা প্রশাসন ও পুলিশের ওপর তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
জনগণ আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধ করবেন এবং নিরীহ মানুষদের নিরাপদে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেবেন।