দেশের চিত্র ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থার মধ্যে তাঁর বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিএনপির হাইকমান্ডের একটি অংশ এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক দাবি করছেন, আইনি ও নিরাপত্তাজনিত কারণ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের অনীহা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রের ভাষ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামী এবং সেনাবাহিনীর একটি অংশ—এই তিন পক্ষের আপত্তির কারণে তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কেউই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি।
বিএনপির একটি অংশের দাবি, নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে ড. ইউনূস চাচ্ছেন না তারেক রহমান দেশে ফিরে সক্রিয় ভূমিকা নিন। তাঁরা এটিকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে অভিযোগ করছেন। তবে এই অভিযোগ যাচাইযোগ্য কোনো সরকারি বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্রের দাবি, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী তারেক রহমানের ফেরা পছন্দ করছে না। দলটির কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ্যে পাওয়া যায়নি।
কিছু সূত্র বলছে, সেনাবাহিনীর ভেতরেও মতভেদ রয়েছে এবং একটি অংশ তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিপক্ষে মত দিয়েছে। সেনাবাহিনী এ ধরনের দাবিকে সাধারণত মন্তব্যের অযোগ্য বলে বিবেচনা করে; কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানা যায়নি।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে বিএনপির নেতারা বলছেন, পুরনো “মাইনাস ফর্মুলা” আবার সক্রিয় করার চেষ্টা চলছে—অর্থাৎ তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তারেক রহমান নিজেও জানিয়েছেন, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এখন আর তাঁর ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণে নেই। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণ এবং সরকারের অবস্থান—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থার মধ্যেও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ বড় হয়ে দাঁড়ানো দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিপথকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।