1. desherchitrabd@gmail.com : Desher DesherChitra : Desher Chitra
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বরখাস্ত ৬ সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট নির্বাচন পেছাতে নয়, প্যাকেজ আকারে সমাধান চাই: এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ দেশে অর্থনীতির করুণ অবস্থা চলছে : রুহুল কবির রিজভী স্কুলছাত্রী আনজুমকে ধর্ষণ ও হত্যা: মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কাতারে ব্রিটিশ ও মার্কিন নাগরিকদের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ থাকার পরামর্শ ওসমান পরিবারের ১২৬ কোটি টাকা ফাঁকির অভিযোগ তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশ খামেনির চিঠি পুতিনের কাছে: রাশিয়ার আরও সহায়তা চায় ইরান ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘমেয়াদে দেখতে চায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ইরানের জেনারেল ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা: যাদের হারালো তেহরান ইসরায়েলে যে ধরনের ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরান

সাহাবিদের পদচিহ্ন চীনে: গুয়াংজুর হুয়াইশেং মসজিদ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

চীনের গুয়াংজু শহরে অবস্থিত হুয়াইশেং মসজিদ। এটা কেবল চীনের নয়, পুরো বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। ইসলামের ইতিহাসে এক বিস্ময়কর অধ্যায় এই মসজিদ। মনে করা হয়, এটি নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাহাবি সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-এর হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

এই মসজিদকে ঘিরে রয়েছে ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি আর শান্তিপূর্ণ দাওয়াহর মিশ্র এক স্মৃতিচারণা। হুয়াইশেং মসজিদ, যার অর্থ—‘প্রবক্তাকে স্মরণে রাখা’। এটি অবস্থিত দক্ষিণ চীনের গুয়াংজু শহরে, আরব সাগরের বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত এলাকাতে। ধারণা করা হয়, এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৬২০-এর দশকে, অর্থাৎ ইসলাম প্রবর্তনের একেবারে প্রারম্ভিক পর্যায়ে।

ঐতিহাসিক মতে, নবীজির (সা.) একজন ঘনিষ্ঠ সাহাবি ও চাচাতো ভাই সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে চীনে পাড়ি জমান। তিনি বাণিজ্য ও শান্তিপূর্ণ বার্তার মাধ্যমে চীনা সম্রাটের দরবারে পৌঁছান এবং ইসলামের শান্তির বাণী তুলে ধরেন। সেই সফরেই গুয়াংজু শহরে একটি মসজিদ নির্মিত হয়, যার নাম পরে হয় হুয়াইশেং।

চীনের ইতিহাসবিদদের অনেকে মেনে নেন, সাহাবিদের সেই আগমনই ইসলাম ধর্মকে চীনের মাটিতে প্রথম পরিচিত করিয়ে দেয়। হুয়াইশেং মসজিদের স্থাপত্যশৈলীতে মেলে আরবীয় স্থাপত্য ও চীনা সংস্কৃতির দারুণ সংমিশ্রণ। এর সবচেয়ে বিখ্যাত অংশ ‘লাইট টাওয়ার মিনার’, যা দেখতে অনেকটা চীনা প্যাগোডার মতো।
দেয়ালজুড়ে রয়েছে সূক্ষ্ম খোদাই আর ইসলামি আর্টওয়ার্ক, যা প্রাচীন শিল্পরুচির এক বাস্তব নমুনা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এটি শুধু ইবাদতের স্থান নয়, বরং এক বৈশ্বিক ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।

আজও এই মসজিদ সক্রিয়। মুসলিমসহ নানা ধর্মের পর্যটক এখানে আসেন কৌতূহল ও শ্রদ্ধাভরে। গুয়াংজু শহরের স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এটি বিশ্বাস, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। এখানে নামাজ, কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হয়।

হুয়াইশেং মসজিদ প্রমাণ করে দেয়—ইসলাম কেবল যুদ্ধ নয়, বরং শান্তিপূর্ণ বাণিজ্য, দাওয়াহ এবং সদাচরণের মাধ্যমেও বিশ্বে বিস্তার লাভ করেছে। সাহাবিরা কখনও কারও ওপর ধর্ম চাপিয়ে দেননি; বরং তারা তাদের বিশ্বাস ও সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

১৩০০ বছরের পুরোনো এই মসজিদ কেবল এক ঐতিহাসিক কাঠামো নয়—বরং এটি সাহাবিদের সেই চেষ্টার এক জীবন্ত সাক্ষ্য, যাঁরা সীমান্ত ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ইসলামের আলো। গুয়াংজুর হুয়াইশেং মসজিদ আজও আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ইসলামের পথ হলো শান্তি, সৌহার্দ্য ও আলোকবর্তিকা হয়ে বিশ্বকে আলোকিত করার।

Share this Post in Your Social Media

এই ধরনের আরও খবর
Copyright © 2025, সাপ্তাহিক দেশের চিত্র. All rights reserved.
Weekly Desher Chitra developed by LogoMyface