আন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম, সাইবার স্পেসসহ, সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলটির বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
শনিবার রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনটি প্রধান সিদ্ধান্ত ঘোষিত:
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বৈঠক শেষে জানান,
১. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গসংগঠনকে শাস্তির আওতায় আনার বিধান যুক্ত হয়েছে।
২. বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।
৩. আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করা হবে।
আগামীকাল এই সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান তিনি।
বিক্ষোভকারীদের প্রতিক্রিয়া:
সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে শাহবাগ এলাকায় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য’ ব্যানারে আয়োজিত গণজমায়েতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত জনগণের বিজয়। তবে জুলাই ঘোষণাপত্র ও বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
আন্দোলনের পটভূমি:
৭ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর এনসিপি, জামায়াত, হেফাজতসহ বিভিন্ন দল আন্দোলনে যোগ দেয়। গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে ২০০৯–২০২৪ মেয়াদে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়, যা বিচার কার্যক্রমে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
যানজট ও জনদুর্ভোগ:
শাহবাগ অবরোধের কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, জনসাধারণ ভোগান্তিতে পড়ে। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা দেওয়া হয়নি।