‘আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ নয়’—লন্ডনে সাফ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
নিজেস্ব প্রতিবেদক
লন্ডন সফরের সময় লেবার এমপি ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে আলোচনার জন্য টিউলিপ সাক্ষাতের অনুরোধ জানালেও ড. ইউনূস তা প্রত্যাখ্যান করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজি, কিছুদিন আগে অধ্যাপক ইউনূসকে একটি চিঠিতে সাক্ষাতের প্রস্তাব দেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, “ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে গঠিত ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে এই সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।”
তবে বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস সাফ জানান, “না, করব না। কারণ এটা একটি আইনি প্রক্রিয়া। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে চাই না। প্রক্রিয়াটি চলতে থাকুক।”
দুদক টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনি অবৈধভাবে জমি গ্রহণ করেছেন। টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, “এটি আদালতের বিষয়। আদালতই ঠিক করবে মামলাটি চলবে কিনা। দুদকের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। তারা সঠিক কাজ করছে।”
প্রত্যর্পণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, “যদি এটি আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হয়, তবে অবশ্যই।” এর মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দেন, আইনি প্রক্রিয়ায় দোষী প্রমাণিত হলে টিউলিপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে।
সাক্ষাৎ প্রত্যাখ্যান করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, “ড. ইউনূস রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কেন্দ্রে রয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি আশা করি, এখন থেকে তিনি সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করবেন এবং আদালতকে সত্য উন্মোচনের সুযোগ দেবেন।”
বিশ্লেষণ:
ড. ইউনূস ও টিউলিপের মধ্যকার এই অনির্ধারিত দূরত্ব বাংলাদেশের রাজনীতিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আইনি প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ইউনূসের অবস্থান স্পষ্ট হলেও, টিউলিপের অভিযোগও ব্রিটিশ রাজনীতিতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।