1. info220@noreply0.com : anyamoorhouse1 :
  2. desherchitrabd@gmail.com : Desher DesherChitra : Desher Chitra
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
লিসবনে পর্তুগাল বিএনপির উদ্যোগে দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নর্থ ইংল্যান্ড বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি ডাকসুতে শিবির সমর্থিত প্যানেলের জয় পোল্যান্ডে রুশ ড্রোন হামলা ‘ইচ্ছাকৃত’, অভিযোগ জেলেনস্কির সিলেটে স্কুল শিক্ষিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, অপমৃত্যু মামলা হাটহাজারীতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্নিদের সংঘর্ষে আহত ২০০, পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি একটিমাত্র ভুলে প্রিয় চা হয়ে উঠতে পারে বিষ! সিরাতুন্নবী (সা.): মানবতার চিরন্তন আদর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ড্রেস কোড: জিন্স-গ্যাবাডিন নয়, নিষিদ্ধ শর্ট স্লিভ ও লেগিংস জার্মানির এসেনে শিক্ষককে ছুরিকাঘাত: গ্রেপ্তারের সময় ১৭ বছরের সন্দেহভাজন গুলিবিদ্ধ

জুমার দিনের করণীয় কাজসমূহ: কোরআন ও হাদীসের আলোকে

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫

মাওলানা মুহাম্মদ জাকির হোসাইন

জুমার দিনের করণীয় কাজসমূহ: কোরআন ও হাদীসের আলোকে

ইসলামে জুমার দিন অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও তাৎপর্যবাহী একটি দিন। জুমার নামাজকে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ ইবাদত হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এই দিনে এমন কিছু কাজ রয়েছে যা কোরআন ও হাদীস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত। এ প্রবন্ধে আমরা কোরআন ও হাদীসের আলোকে জুমার দিনের করণীয় বিষয়গুলো আলোচনা করবো।


জুমার দিনের গুরুত্ব ও মর্যাদা

আল-কুরআনের বক্তব্য:

আল্লাহ তাআলা বলেন:

“হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিনের নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা জানতে।”
(সূরা জুমু‘আহ, আয়াত ৯)

এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, জুমার নামাজ শুধু একটি নামাজ নয়; বরং এটি এমন এক ইবাদত, যার জন্য অন্য সকল দুনিয়াবি কাজ থেকে বিরত থাকা ফরজ করা হয়েছে।


হাদীসের আলোকে জুমার দিনের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“সূর্য যেদিন উদিত হয়, সেই দিনের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আর কিয়ামতও হবে জুমার দিনেই।”
(সহীহ মুসলিম: ৮৫৪)


জুমার দিনের করণীয় কাজসমূহ

১. গোসল করা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

রাসূল (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে, ভালো কাপড় পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং যথাসময়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে — তার আগের জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত ও অতিরিক্ত তিনদিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।”
(সহীহ মুসলিম: ৮৫৭)

গোসল করা জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনি মসজিদের পরিবেশও সুগন্ধময় ও পরিচ্ছন্ন থাকে।

২. আগে আগে মসজিদে যাওয়া

নবী (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি জুমার দিন প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো; পরের জন যেন একটি গাভী কোরবানি করলো; এরপরের জন যেন একটি ভেড়া কোরবানি করলো…”
(সহীহ বুখারী: ৮৮৭)

প্রথম দিকে মসজিদে গেলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।

৩. সূরা কাহফ পাঠ করা

রাসূল (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করে, তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় আলোকিত করে দেওয়া হয়।”
(হাদীস: আল-হাকিম, সহীহ)

সূরা কাহফ পড়া এই দিনের বিশেষ আমল। এতে দুনিয়াবি ও আখিরাতের অনেক ফজিলত রয়েছে।

৪. অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করা

নবী (সা.) বলেন:

“তোমরা জুমার দিনে আমার উপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো; কেননা তোমাদের দরুদ আমার নিকট পেশ করা হয়।”
(আবু দাউদ: ১৫৩১)

জুমার দিন হলো নবীর প্রতি দরুদ পাঠের শ্রেষ্ঠ সময়।

৫. খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা

খুতবার সময় কথা বলা, মোবাইল ব্যবহার বা অন্য কোনো কিছু করা নিষিদ্ধ। নবী (সা.) বলেন:

“যদি তুমি খুতবা চলাকালে কাউকে ‘চুপ কর’ বলো, তবে তুমি নিজেই অনর্থক কথা বললে।”
(সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

এটি বোঝায়, খুতবার সময় সম্পূর্ণ মনোযোগসহ শ্রবণ করাই একমাত্র করণীয়।

৬. জুমার নামাজ আদায় করা

জুমার নামাজ ফরজ এবং তা ছেড়ে দেওয়া কবিরা গুনাহ। রাসূল (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি বিনা কারণে তিন জুমা নামাজ পরপর ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।”
(তিরমিযী: ৫০০)

৭. দোয়া ও ইস্তিগফার করা

নবী (সা.) বলেন:

“জুমার দিন এমন একটি সময় আছে, যে সময় বান্দা দোয়া করলে, তা কবুল করা হয়।”
(সহীহ মুসলিম: ৮৫২)

ইমামদের মতে, এই সময়টি ইমামের খুতবার সময় থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অথবা আসরের পরে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত হতে পারে।

৮. আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির সুযোগ

জুমার দিন হচ্ছে সাপ্তাহিক ঈদ। এই দিনে প্রতিটি মুসলমানের উচিত নিজ আমলনামার দিকে ফিরে তাকানো, নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করা এবং খাঁটি তওবা করা।


জুমার দিনের কিছু বর্জনীয় বিষয়

  • জুমার নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করা।
  • খুতবার সময় কথা বলা বা মোবাইল চালানো।
  • পরিচ্ছন্নতা ছাড়া মসজিদে যাওয়া।
  • জুমার গুরুত্ব হালকা ভাবে নেওয়া।

জুমার দিন হলো মুসলমানদের সাপ্তাহিক সম্মেলনের দিন, একটি বিশেষ ইবাদতের দিন, আত্মশুদ্ধির দিন এবং আল্লাহর রহমত লাভের দিন। কোরআন ও হাদীসে এই দিনের ফজিলত ও করণীয় স্পষ্টভাবে নির্ধারিত। মুসলমানদের উচিত এই দিনের প্রতি যত্নবান হওয়া, জুমার নামাজের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা, খুতবা মনোযোগ সহকারে শোনা, বেশি বেশি দোয়া, দরুদ ও ইবাদতে ব্যস্ত থাকা।

আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সবাইকে জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করে সে অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দেন।

আমীন।

Share this Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ধরনের আরও খবর
Copyright © 2025, সাপ্তাহিক দেশের চিত্র. All rights reserved.
Weekly Desher Chitra developed by LogoMyface