নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের অন্যতম অনলাইন টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টিকিট রিফান্ড আতঙ্কে পড়েছে শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ট্রাভেল এজেন্সি। ভুক্তভোগী অন্তত ৬৯টি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের প্রায় ২৭ কোটি টাকার টিকিট ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) রাতে ফ্লাইট এক্সপার্ট বন্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে, ঢাকার মতিঝিলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ভিড় করে ক্ষতিগ্রস্তরা। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ফ্লাইট এক্সপার্টের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকা সোমা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি এজেন্সি রাতের অন্ধকারে একতরফাভাবে টিকিট রিফান্ড শুরু করে, যার ফলে বাড়ে উদ্বেগ।
কুমিল্লার এক এজেন্সি মালিক মাহমুদ বলেন, “আমার কাটা ৯টি টিকিটের মধ্যে দুইটি ইতিমধ্যেই বাতিল হয়ে গেছে, যার মূল্য প্রায় এক লাখ টাকা। বাকিগুলো নিয়েও শঙ্কায় আছি।”
ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন—সোমা ইন্টারন্যাশনাল কেন একতরফা রিফান্ড করেছে এবং কেন তারা বিষয়টি গোপন রেখেছে। এজেন্সিটি এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ, দাবি করছে—সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে সিলেট অফিস থেকে, যেখানে ফোন করেও সাড়া মিলছে না।
অন্যদিকে, ফ্লাইট এক্সপার্টের এমডি সালমান বিন রশিদ হোয়াটসঅ্যাপে কর্মীদের জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তিনি দেশ ছাড়ছেন। তবে তিনি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ জানিয়েছেন, “টিকিট রিফান্ড যেন কেউ না করতে পারে, সে বিষয়ে আগামীকাল মন্ত্রণালয়ে একটি অনুরোধপত্র দেওয়া হবে। ফ্লাইট এক্সপার্টকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, ফ্লাইট এক্সপার্ট তাদের নিজস্ব আইএটিএ নম্বর ছাড়াও সোমা ইন্টারন্যাশনাল, হাজী এয়ার ট্রাভেলস, মক্কা ট্যুরসসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের আইএটিএ নম্বর ব্যবহার করে টিকিট বিক্রি করত। প্রতিষ্ঠানটি টিকিট ছাড়াও হোটেল বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ এবং ভিসা প্রসেসিং সেবাও দিত।
বর্তমানে ভুক্তভোগীদের মূল শঙ্কা—তারা যে টিকিটের দাম আগেই পরিশোধ করেছেন, সেই অর্থ ফেরত পাবেন কি না। বিষয়টি নিয়ে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।
https://shorturl.fm/KN8oT
https://shorturl.fm/Qdw7f