বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
সরকার দেশে ক্লোন করা, অবৈধভাবে আমদানি করা ও চোরাচালানকৃত সব ধরনের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, অবৈধ ফোনের সঙ্গে বহু ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে—ভুল সিম রেজিস্ট্রেশন, এমএলএম প্রতারণার বাল্ক এসএমএস, জুয়ার লিংক ছড়ানো, ভুল এমএফএস রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন স্ক্যামিং, আইএমইআই ক্লোনিং, প্রযুক্তিগত রয়্যালটি ফাঁকি, শুল্কচুরি, লাগেজ পার্টির মাধ্যমে মোবাইল আনা এবং সীমান্ত চোরাচালান ইত্যাদি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন,
“নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবৈধ ফোনের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিডা, ব্যাংকিং খাত, বিএফআইইউ ও এনবিআর থেকে দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ আসছে। মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ও টেলিকম খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এ সিদ্ধান্ত অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, শুল্ক না দিয়ে লাখ লাখ অবৈধ মোবাইল এনে বাজারে ‘ডাম্পিং’ করার দিন শেষ। তবে এতে বৈধ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। বৈধভাবে আমদানি ও দেশীয় উৎপাদকদের ফোন বিক্রি অব্যাহত থাকবে। শুধু অবৈধ ও ক্লোন করা ফোনই বন্ধ হবে।
ফয়েজ আহমদ জানান, একটি আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করে লাখ লাখ ফোন তৈরি করে দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে—যা বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি। এ কারণে কিছু চক্র ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR) বন্ধে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। লাগেজ পার্টি, ভুয়া এইচএস কোড ব্যবহার এবং কেজিদরে ফোন আমদানির মাধ্যমে ডিজিটাল অপরাধের বিস্তার ঠেকাতে সরকার কঠোর হচ্ছে।
তিনি বলেন,
“আমরা বিটিআরসিতে আলোচনা করেছি। আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় মোবাইল উৎপাদকদের দাম কমাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে গ্রাহকও সুবিধা পান।”
বিদেশ থেকে ফোন আনার বিষয়ে তিনি পরিষ্কার করে বলেন, নিয়ম মেনে প্রবাসীরা এক বা দুইটি ফোন আনতে পারবেন এবং সেগুলো সহজ প্রক্রিয়ায় রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। এর বেশি আনলে এনবিআরের নিয়ম অনুযায়ী ফি দিতে হবে—যা পুরোনো বিধান।
বর্তমানে ব্যবহৃত সব অ্যাকটিভ ফোন ১৬ ডিসেম্বরের আগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈধ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে সিম সবসময় নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন রাখার পরামর্শ দেন।
শেষে তিনি জানান,
“আমরা ক্লোন করা, অবৈধভাবে আমদানিকৃত এবং চোরাচালানকৃত ফোন বন্ধ করব—এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। এখানে কোনো ছাড় নেই।”