1. info220@noreply0.com : anyamoorhouse1 :
  2. desherchitrabd@gmail.com : Desher DesherChitra : Desher Chitra
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
লিসবনে পর্তুগাল বিএনপির উদ্যোগে দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নর্থ ইংল্যান্ড বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি ডাকসুতে শিবির সমর্থিত প্যানেলের জয় পোল্যান্ডে রুশ ড্রোন হামলা ‘ইচ্ছাকৃত’, অভিযোগ জেলেনস্কির সিলেটে স্কুল শিক্ষিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, অপমৃত্যু মামলা হাটহাজারীতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্নিদের সংঘর্ষে আহত ২০০, পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি একটিমাত্র ভুলে প্রিয় চা হয়ে উঠতে পারে বিষ! সিরাতুন্নবী (সা.): মানবতার চিরন্তন আদর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ড্রেস কোড: জিন্স-গ্যাবাডিন নয়, নিষিদ্ধ শর্ট স্লিভ ও লেগিংস জার্মানির এসেনে শিক্ষককে ছুরিকাঘাত: গ্রেপ্তারের সময় ১৭ বছরের সন্দেহভাজন গুলিবিদ্ধ

মেন্টাল হেলথ এবং ইসলাম

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক

বর্তমান বিশ্বে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। উদ্বেগ, হতাশা, একাকিত্ব, ভয় কিংবা আত্মহত্যার প্রবণতা—এসব আজকের সমাজে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। অথচ মানসিক সুস্থতা শারীরিক সুস্থতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।

মেন্টাল হেলথ কী

মেন্টাল হেলথ মানে কেবল মানসিক রোগের অনুপস্থিতি নয়, বরং মন ও চিন্তার ভারসাম্য, আত্মতৃপ্তি, ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসের সঠিক অবস্থান। একজন মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

মানসিক স্বাস্থ্য ও ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

ইসলাম মানুষের দেহ, মন ও আত্মাকে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত মনে করে। তাই কেবল শারীরিক নয়, মানসিক সুস্থতাও ইসলামের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই অন্তরসমূহ শান্তি লাভ করে।” (সূরা রা’দ: ২৮)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, মানসিক শান্তির প্রধান উৎস হলো আল্লাহর স্মরণ। তাই ইসলামিক লাইফ স্টাইল মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে।

নামাজ ও মানসিক স্বস্তি

নিয়মিত নামাজ পড়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এক ধরণের থেরাপি। নামাজ মানুষকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করতে শেখায়। এতে মন হালকা হয়, হতাশা কমে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে। বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও দেখা গেছে, নিয়মিত প্রার্থনা বা ধ্যান মানুষকে স্ট্রেস ও উদ্বেগ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

রোজা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ

রমজানের রোজা শুধু ক্ষুধা-তৃষ্ণা সহ্য করার বিষয় নয়; বরং আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য এবং সহমর্মিতা শেখায়। আত্মনিয়ন্ত্রণ মানসিক দৃঢ়তা বাড়ায়, যা হতাশা ও মানসিক অস্থিরতা কাটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

দুআ ও আল্লাহর ওপর ভরসা

মানুষ জীবনে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়—অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক টানাপোড়েন, রোগ-ব্যাধি কিংবা প্রিয়জন হারানোর বেদনা। এসব ক্ষেত্রে দুআ ও আল্লাহর ওপর ভরসা মানুষকে মানসিকভাবে শক্ত রাখে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“দুআ হলো মুমিনের অস্ত্র।”
অর্থাৎ দুআ কেবল আধ্যাত্মিক শক্তি নয়, মানসিক প্রশান্তিরও মাধ্যম।

সমাজ ও পারস্পরিক সহযোগিতা

মানসিক সুস্থতার অন্যতম ভিত্তি হলো সামাজিক সহায়তা। ইসলাম মানুষকে ভ্রাতৃত্ব, দয়া ও সহযোগিতার শিক্ষা দেয়। পরিবার ও সমাজে যদি পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহযোগিতা থাকে, তবে মানসিক সমস্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। যেমন, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, দরিদ্রকে সাহায্য করা বা কষ্টে থাকা কাউকে সান্ত্বনা দেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

কৃতজ্ঞতা ও ধৈর্য

মানসিক সমস্যার অনেকটাই আসে অতি প্রত্যাশা ও হতাশা থেকে। ইসলাম মানুষকে শিখিয়েছে—যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকা এবং না পাওয়া বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করা। কুরআনে আল্লাহ বলেন:
“তোমরা যদি কৃতজ্ঞ হও, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বেশি দেব।” (সূরা ইবরাহীম: ৭)
কৃতজ্ঞতা মানসিক প্রশান্তি আনে, হতাশা দূর করে এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে।

হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা

অধিকাংশ মানসিক অস্থিরতা আসে অন্যায় কাজের পরিণতি থেকে—যেমন নেশা, জুয়া, সুদ, ব্যভিচার ইত্যাদি। এসব হারাম কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা মানসিক সুস্থতা রক্ষায় সহায়ক। কারণ পাপের কাজ মানুষকে অপরাধবোধ, ভয় ও অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দেয়।

চিকিৎসা গ্রহণের অনুমোদন

ইসলাম কেবল ইবাদত বা আধ্যাত্মিক অনুশীলনের ওপর নির্ভর করতে বলেনি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“আল্লাহ যখন রোগ দিয়েছেন, তখন তার চিকিৎসাও দিয়েছেন।”
তাই মানসিক রোগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, কাউন্সেলিং করা বা ওষুধ সেবন করা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ।

আধুনিক চ্যালেঞ্জ ও ইসলামের সমাধান

আজকের যুগে প্রযুক্তি, প্রতিযোগিতা ও পারিবারিক ভাঙনের কারণে মানসিক চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় ইসলাম মানুষকে সময়ের সঠিক ব্যবহার, পরিমিত জীবনযাপন, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি অর্জনের পথ দেখায়।

মানসিক স্বাস্থ্য একটি সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত। ইসলাম আধ্যাত্মিকতা, নৈতিকতা, ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, সামাজিক সহযোগিতা ও চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক রূপরেখা দিয়েছে। তাই একজন মুসলমান যদি ইসলামের আলোকে জীবনযাপন করে, তবে সে শুধু দেহ নয়, মনকেও সুস্থ রাখতে পারবে।

Share this Post in Your Social Media

Comments are closed.

এই ধরনের আরও খবর
Copyright © 2025, সাপ্তাহিক দেশের চিত্র. All rights reserved.
Weekly Desher Chitra developed by LogoMyface